জামালগঞ্জের কামারগাঁও গ্রামে ৫টি বাড়িতে পূজামন্ডপে ও বিয়ে বাড়িতে হামলায় থানায় মামলা
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
১৮ আগস্ট, ২০২২, 2:02 PM
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
১৮ আগস্ট, ২০২২, 2:02 PM
জামালগঞ্জের কামারগাঁও গ্রামে ৫টি বাড়িতে পূজামন্ডপে ও বিয়ে বাড়িতে হামলায় থানায় মামলা
সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলার ফেনারবাক ইউনিয়নের কামারগাঁও গ্রামে মনসা দেবীর পূজা চলাকালীন সময়ে ৫টি হিন্দু বাড়ির পূজামন্ডপে ও একটি বিয়ে বাড়ির অনুষ্ঠানে হামলা চালিয়ে মূর্তি(প্রতিমা) ভাংচুর ও করে বিয়ে বাড়ির খাবারের জন্য তৈরী করা মাছ মাংস তছনছ করে পেলে একই গ্রামের কিছু দৃর্বত্তরা।
বুধবার দিবাগত গভীর রাতে তারা সংঘবদ্ধভাবে হিন্দু পল্লীতে গিয়ে পূর্বপরিকল্পিতভাবে হামলা চালিয়ে মূর্তি ভাংচুর শেষে বৃদ্ধ নারী পূরুষদের মারধরের ঘটনা ঘটিয়ে টাকা পয়সা ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
স্থানীয় ও পুলিশ সুত্রে জানা যায় গতকাল বুধবার ছিল হিন্দু সম্প্রদায়ের মনসা পূজা। রাতে পূর্ববিরোধের জেরে কামারগাঁও একই গ্রামের অন্যপাড়ার আলেক চানঁ মিয়ার ছেলে সাকিল মিয়া(২৫),তার আপন সহোদর সাজিদ মিয়া,তাদের স্ত্রী,মেয়ে এবং বায়রা মোস্তাক মিয়ার ছেলে ছানা উল্ল্যাহ মিয়ার নেতৃত্বে ১০/১২ জন গভীর রাতে লাঠিসোটা ও দাড়াঁলো অন্ত্র নিয়ে হিন্দু পাড়ায় এসে করুণা সিন্ধু তালুকদারের ছেলে খগেন্দ্র তালুকদার,মৃত মতিলাল দাসের বিধবা স্ত্রী মহামায়া,মহানন্দ সরকারের ছেলে প্রেমানন্দ সরকার,মহানন্দ সরকারের ছেলে প্রেমানন্দ সরকার,গণেশ সরকার ও সরিন্দ্র মজুমদারের ছেলে শৈলেন্দ্র মজুমদারের বাড়িতে এসে পূজামন্ডপে মনসা দেবীর মূর্তি ভাংচুর করে। এ সময় হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন বাধা দিলে তাদের উপর ও লাঠি দিয়ে আঘাত করায় একজন নারী ও একজন পূরুষ আহত হন। এছাড়াও হামলাকারীরা প্রহল্লাদ সরকারের ছেলে সঞ্জিত সরকারের বিয়ে বাড়িতে হামলা করে ব্যাপক ভাংচুর চালায় । এ সময় হামলাকারীরা বিয়ে বাড়িতে খাবারের আয়োজনে প্রস্তুত রাখা মাছ মাংস তছনছ করে ফেলে দেয়। বিয়ের অনুষ্ঠানে হামলা করার সময় লাইটিং ডেকোরেশনের মেইকার মামনু মিয়া বাধা দিলে তার উপর ও হামলা করে তার কাছে রাখা ৪০ হাজার টাকা ও একটি মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় হিন্দু পল্লীতে আতংঙ্ক বিরাজ করছে। এ ঘটনায় পুলিশ এখনো কাউকে আটক করতে পারেনি।
খবর পেয়ে আজ বৃহস্পতিবার সকালে স্থানীয় ফেনারবাক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কাজল চন্দ্র তালুকদার ও জামালগঞ্জ থানার ওসি মীর মোহাম্মদ আব্দুন নাসের ঘটনাস্থল পরির্দশন করেছেন। এ ঘটনায় খগেন্দ্র তালুকদার বৃহস্পতিবার দুপুরে বাদি হয়ে নামাংঙ্কিত হামলাকারী ব্যক্তিদের আসামী করে জামালগঞ্জ থানায় মামলা করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে ফেনারবাঁক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কাজল চন্দ্র তালুকদার জানান,এটা কোন সাম্প্রদায়িক ঘটনা নয়। যারা হামলা চালিয়ে মূর্তি ভাংচুর করেছেন ঐ এলাকায় হিন্দু মুসলমানদের যে সম্প্রীতির বন্ধন রয়েছে সেটা অটুট থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন এবং বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে বলেও তিনি জানান।
এ ব্যাপার জামালগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মীর মোহাম্মদ আব্দুন নাসের জানিয়েছেন পূর্ববিরোধের জেরে হামলার ঘটনাটি ঘটেছে এ সময় দুটি বাড়িতে দুটি মুর্তির কিছুটা ক্ষতি হয়েছে । তবে এই ঘটনার সাথে যারাই জড়িত তাদের প্রত্যেককে আইনের আওতায় আনা হবে। তবে এলাকায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে বলে জানান তিনি।