জামালগঞ্জে সড়কের বেহাল দশা,দুইটি ইউনিয়নের প্রায় অর্ধলক্ষ মানুষের ভোগান্তি
আব্দুস সামাদ আফিন্দী নাহিদ, জামালগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
১৫ নভেম্বর, ২০২১, 11:20 AM
আব্দুস সামাদ আফিন্দী নাহিদ, জামালগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
১৫ নভেম্বর, ২০২১, 11:20 AM
জামালগঞ্জে সড়কের বেহাল দশা,দুইটি ইউনিয়নের প্রায় অর্ধলক্ষ মানুষের ভোগান্তি
দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় জামালগঞ্জ ও কারেন্টের বাজারের ৪ কিলোমিটার সড়কের অধিকাংশ স্থানে কানাখন্দে ভরে গেছে। এতে এ সড়কটি চলাচলকারী দুইটি ইউনিয়নের ৩০টি গ্রামের প্রায় অর্ধলক্ষ মানুষ ভোগান্তির শিকার হচ্ছে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) উপজেলা কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, জামালগঞ্জ-কারেন্টের বাজার সড়কটির দৈর্ঘ্য ৪ কিলোমিটার। এর মধ্যে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে এলজিইডির অর্থায়নে ওই সড়কের লালবাজার পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার রাস্তার কাজ সংস্কার করা হয়েছিল।
লালবাজার এলাকার কয়েকজন বাসিন্দাদের সাথে আলাপ করে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে এ সড়কটি সংস্কার না হওয়ায় অধিকাংশ স্থান ভেঙ্গে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এর কারণে ভীমখালী ও ফেনারবাঁক ইউনিয়নের মামুদপুর, ফেকুল মামুদপুর, ছেলাইয়া, মানিগাঁও, তেরানগর, লালবাজার, কারেন্টের বাজার, চান্দের নগর, ভান্ডা রাজাবাজ, মাতারগাঁও, রাজাপুর, গঙ্গাধরপুর, ছয়হারা, দৌলতপুর, ভাটি দৌলতপুর, বিনাজুরা, লালপুর, রসুলপুর, লক্ষ্মীপুর, নাজিমনগর, হটামারা, উদয়পুর, কাশিপুরসহ প্রায় ৩০টি গ্রামের অর্ধলক্ষাধিক মানুষ ভোগান্তির শিকার হচ্ছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সড়কের বিভিন্ন স্থানে পাকা ভেঙ্গে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সড়কের অনেক জায়গায় রাস্তার সাইট ভেঙ্গে পড়ে রয়েছে। রাস্তাটি গত কয়েক বছর আগে সংস্কার করার কারণে কিছু জায়গায় উঁচুনীচু হওয়ায় জনগণের ভোগান্তি আরও বেড়েছে। এছাড়া সড়কটি ৮ ফুট প্রস্থ থাকায় ২টি গাড়ি অতিক্রম করতে দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে প্রায়ই। সড়কটিতে ২টি বক্স কালভার্ট, ১টি বড় কালভার্টের দুই পার্শ্বে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। রাস্তাটি প্রশ্বস্ত করা এখন সময়ের দাবিতে পরিণত হয়েছে।
ছেলাইয়া গ্রামের মোশাররফ হোসেন জানান, তাদের উৎপাদিত কৃষিপণ্য উপজেলা খাদ্য গুদামে নিয়ে বিক্রি করতে হয়। কিন্তু ভাঙ্গাচুরা সড়কের কারণে কোন গাড়ি যেতে চায় না। কোন গাড়ি নিলেও অতিরিক্ত ভাড়া গুণতে হয়।
অটোচালক হাসান আহমেদ বলেন, ভাঙ্গাচুরা রাস্তার জন্য আমাদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ১৫ মিনিটের রাস্তা এক ঘন্টা সময় লাগে। এছাড়াও আমাদের অটোগাড়ি প্রতিদিনই মেরামত করতে হয়। পেটের দায়ে বাধ্য হয়েই ভাঙ্গাচুরা রাস্তায় অটো চালাতে হচ্ছে।
এলাকার তরুণ সমাজসেবক আক্তারুজ্জামান তালুকদার বলেন, সড়কটি এখন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হতে হচ্ছে মানুষকে। জনসাধারণের চলাচল ও মালামাল পরিবহনে সড়কটি প্রশ্বস্তকরণসহ সংস্কার করা এখন অর্ধলক্ষ মানুষের গণদাবিতে পরিণত হয়েছে।
এ ব্যাপারে ভীমখালী ইউপি চেয়ারম্যান মো. দুলাল মিয়া বলেন, সড়কটির বেহাল অবস্থার কারণে আমার এবং পার্শ্ববর্তী ইউনিয়নের প্রায় ৩০টি গ্রামের মানুষের চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। এ বিষয়ে উপজেলা সমন্বয় সভায় কয়েকবার বিষয়টি উত্থাপন করেছি। তাছাড়া এলজিইডি উপজেলা প্রকৌশলীর সাথে সংস্কারের ব্যাপারে যোগাযোগ করেছি। তারা জানিয়েছে সড়কটি সংস্কারের জন্য একটি প্রকল্প প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে ফেনারবাঁক ইউপি চেয়ারম্যান করুণা সিন্ধু তালুকদার বলেন, আমার ইউনিয়নের প্রায় ২৫টি গ্রামের লোকজনের উপজেলা সদরের সাথে চলাচলের একমাত্র রাস্তা এই সড়ক। সড়কের বেহাল দশার কারণে শিক্ষার্থী, চাকরিজীবী, রোগীসহ লোকজনের এই সড়ক দিয়ে চলাচল করতে খুবই কষ্ট হচ্ছে। সড়কের অনেক জায়গায় বৃষ্টির পানি জমে রাস্তা আরো ভেঙ্গে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। আমি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট জোর দাবি জানাচ্ছি অতি দ্রুত যেন রাস্তাটি সংস্কার করা হয়।
এ ব্যাপারে উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী মো. আব্দুস সাত্তার জানান, হাওরাঞ্চলের বন্যা ব্যবস্থাপনা ও জীবনমান উন্নয়ন প্রকল্পে সড়কটি মেরামতের জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। প্রকল্পটি অনুমোদন হয়ে বরাদ্দ আসলে দ্রুত রাস্তাটি সংস্কার করা হবে।